বিভিন্ন গবেষনা থেকে দেখা যায় যে, অর্গানিক খাবার বেশি পুষ্টিমান সম্পন্ন এবং অধিক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এই সকল খাদ্য জৈব সার সংযুক্ত মাটিতে চাষ করা হয় বলে শরীরের টক্সিন (বিষাক্ত উপাদান) নিরসনে ভূমিকা রাখে। অর্গানিক ফলমূল ও সবজি গ্রহনের ফলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমান বেড়ে যায় ২০%-৪০%।
অর্গানিক চাষাবাদ এবং খাদ্যের পুষ্টিমান
১) মাটির উর্বরতা :
গবেষনায় দেখা গেছে যে, কৃত্রিম সার ব্যবহার করে জমি চাষাবাদ করলে ৫০ বছরের মধ্যেই জমির নাইট্রোজেন ও কার্বন প্রায় ৫০% থেকে ৬৫% হ্রাস পায় এবং এক পর্যায়ে চাষাবাদের অযোগ্য হয়ে পড়ে। অর্গানিক চাষাবাদে জৈব বস্তু ব্যবহার করে মাটির প্রয়োজনীয় তাপ ও উপকারী জীবানু সংরক্ষন করা হয়। তা ছাড়া মাটির ক্ষয় কম হয় বিধায় এ পদ্ধতিতে উৎপাদনশীলতাও বৃদ্ধি পায়।
২) জীব বৈচিত্র :
বর্তমান চাষাবাদে কৃত্রিম কীটনাশক ও আগাছা নাশক ব্যবহার এবং একই ধরনের ফসল বার বার চাষের কারনে অনেক মূল্যবান প্রজাতির শস্য স্থায়ীভাবে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া উক্ত বিষাক্ত উপাদানসমূহ পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ার কারনে অনেক পশুপাখি এবং ক্ষুদ্রপ্রানী বিষাক্ত হয়ে পরছে। অর্গানিক চাষাবাদে কৃত্রিম সিনথেটিক বস্তুর পরিবের্তে জৈব বস্তু ব্যবহার করা হয়, যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ, পোকামাকড়, পাখি এবং প্রানীর জন্য একটি স্বর্গরাজ্য তৈরি করে।
”The Journal of Biological conservation-2005” এ উদ্ভিদ, মাটি, জীবানু, মাকড়সা, প্রজাপতি, কীট, পাখি এবং স্তন্যপায়ী প্রানীর উপর অর্গানিক ও প্রচলিত ফার্মিং এর প্রভাব নিয়ে ৭৬টি গবেষনাপত্র পর্যালোচিত হয়। এ পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, অর্গানিক ফার্মগুলোতে প্রজাতির প্রাচুর্য্য এবং সমৃদ্ধি বেশি থাকে।
৩) নাইট্রোজেন ছড়িয়ে পড়া (Run-off) সংক্রান্ত সমস্যা :
প্রচলিত কৃষি পদ্ধতি সিনথেটিক সার বিশেষ করে নাইট্রোজেন এর উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। বিশ্বব্যাপী নাইট্রোজেন এর ব্যবহার গত ৫০ বছরে ১০ গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। এই নাইট্রোজেনের ৫০% থেকে ৭৫% নদী এবং অন্যান্য বাস্তুতন্ত্রের (Ecosystem) মধ্যে মিশে যায়, ফলে পানি এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে পড়ে। অর্গানিক চাষাবাদে যেহেতু কৃত্রিম নাইট্রোজেন সার ব্যবহৃত হয় না তাই বর্ধিত ঝুকিঁগুলোও সেখানে থাকে না।
৪) কীটনাশক/ আগাছানাশক সংক্রান্ত সমস্যা :
বর্তমান কৃষি পদ্ধতিতে কীটনাশক ও আগাছানাশক প্রচুর মাত্রায় ব্যবহৃত হয়। ১৯৩১ সাল থেকে ১৯৯৭ সালের ব্যবধানে এগুলোর ব্যবহার একর প্রতি প্রায় দুইগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৯০ দশকের মার্কিন এক ভূতাত্বিক জরিপে সে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগৃহিত ৮০০০ পানি এবং মাছের নমুনার ৭৬ টি পৃথক কীটনাশক পরীক্ষা করা হয়। উক্ত জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফলের মূল অংশ নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
ক) ৯০% এর বেশি প্রবাহের পানি ও মাছের মধ্যে এক বা একাধিক কীটনাশক রয়েছে।
খ) ভূগর্ভস্থ পানির ৫০% এর বেশি নমুনার মধ্যে এক বা একাধিক কীটনাশক রয়েছে।
গ) Atrazine, Metolachlor, Alachlor and Cyanazine জাতীয় আগাছানাশক কৃষি অঞ্চলের পানির প্রবাহ এবং অগভীর জলাশয় বেশী মাত্রায় পাওয়া গেছে।
ঘ) প্রায় প্রতিটি মাছের নমুনায় ডিডিটি (DDT) পাওয়া যায়, যা কারসিনোজেন হিসেবে বিবেচিত। সত্তর/ আশির দশক থেকেই আমেরিকাসহ পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশে DDT এর ব্যবহার নিষিদ্ধ।
৫) শক্তির (Energy) ব্যবহার সংক্রান্ত সুবিধা :
অর্গানিক চাষাবাদ এ তুলনামূলকভাবে কম শক্তি ব্যয়ের প্রয়োজন হয়। British Department for Environment, Food & Rural Affairs এ গবেষনায় দেখা গেছে যে, এ পদ্ধতিতে শস্য উৎপাদনে প্রতি ইউনিটে শক্তির ব্যয় ৩৫% কম হয়। University of Essex এর বিজ্ঞানীরা তাঁদের গবেষনায় দেখতে পান যে, প্রচলিত ফার্মিং পদ্ধতির সাপেক্ষে অর্গানিক ফার্মিং পদ্ধতিতে কেবলমাত্র ৩০% থেকে ৫০% শক্তি ব্যবহৃত হয়।
৬) কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষন সংক্রান্ত :
Rodale Institute, USA ২৩ বছর ব্যাপী অর্গানিক ফার্মিং এর কার্বন ডাই অক্সাইড শোষন ক্ষমতার উপর এক গবেষনা পরিচালনা করে দেখতে পায় যে, আমেরিকার সমস্ত চাষের জমিতে যদি অর্গানিক ফার্মিং পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা যায়, তাহলে বছরে প্রায় ৫৮০ বিলিয়ন পাউন্ড কার্বন ডাই অক্সাইড বায়ু থেকে মাটি শোষন করে নিবে। যা পরিবেশের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
All Organic Products
July 10, 2023
Organic Baby Food: Organic baby food is made from fruits, vegetables, and grains that are grown without the use of synthetic pesticides or fertilizers. These foods are free from harmful additives and preservatives and are a great way to introduce your baby to healthy eating habits.