
আমাদের শরীর সবসময়ই তার তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে চেষ্টা করে। কারণ এই তাপমাত্রার মধ্যেই আমাদের দেহ ঠিকমত কাজ করতে পারে।
sds

কিন্তু আবহাওয়া যখন গরম হয়ে যায়, তখন দেহের ভেতরের তাপমাত্রা কমিয়ে রাখার জন্য আমাদের শরীরকে অনেক কাজ করতে হয়।
শরীর থেকে তাপ ছেড়ে দেয়ার জন্য চামড়ার কাছাকাছি যেসব রক্তনালী আছে সেগুলো খুলে যায় এবং দেহে ঘাম হতে শুরু করে।
ওই ঘাম যখন জলীয় বাষ্প হয়ে উড়ে যায়, তখন নাটকীয়ভাবে আশপাশের তাপমাত্রা আরো বেড়ে যায়, কিন্তু এর ফলে ত্বক ঠাণ্ডা হয়ে আসে।
বয়স্ক মানুষ অথবা যারা দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগের মতো অসুখে ভুগছেন, গরমের কারণে তাদের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

তীব্র গরম তাদের শরীরে যে ধরনের চাপ তৈরি করে তারা সেটা সামাল দিতে ব্যর্থ হতে পারেন।
যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের শরীরের পানি খুব দ্রুত কমে যেতে পারে। এছাড়াও এই রোগের কারণে রক্তনালীতে পরিবর্তন ঘটতে পারে যার ফলে শরীরে ঘাম হওয়ার ক্ষমতাও কমে যেতে পারে।
শিশুদের মধ্যেও এই ঝুঁকি বেশি।
যারা ডিমেনশিয়ার মতো মস্তিষ্কের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত তারা হয়তো গরমের বিষয়ে অসচেতন থাকতে পারেন এবং এ বিষয়ে কিছু করতেও তারা অক্ষম।
যাদের বাড়িঘর নেই তারা অনেক বেশি সময় ধরে সূর্যের নিচে থাকার কারণে ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
যারা ভবনের সবচেয়ে উপরের ফ্ল্যাটে থাকেন তাদেরও বেশি তাপ সহ্য করতে হয়।
প্রচুর ঘাম হওয়ার কারণে শরীরে তরল পদার্থ ও লবণের পরিমাণ কমে যায়, গুরুতর ক্ষেত্রে দেহে এ-দুটো জিনিসের মধ্যে যে ভারসাম্য আছে তাতেও পরিবর্তন ঘটে।
এসব কিছু একসাথে মিলিয়ে গরমে শরীর পরিশ্রান্ত হয়ে যেতে পারে এবং তার লক্ষণগুলো হচ্ছে–
০ মাথা চক্কর দেয়া
০ বমি বমি ভাব
০ নিস্তেজ হয়ে পড়া
০ মূর্ছা যাওয়া
০ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়া
০ পেশি সংকুচিত হওয়া
০ মাথা ব্যথা
০ প্রচণ্ড ঘাম হওয়া
০ ক্লান্তি
০ আর রক্তচাপ খুব বেশি কমে গেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
এ রকম পরিস্থিতিতে কাউকে যদি আধা ঘণ্টার মধ্যে ঠাণ্ডা করা যায়, তাহলে বড় ধরনের ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
ব্রিটেনে জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা বা এনএইচএস এ বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছে–
০ তাকে ঠাণ্ডা জায়গায় সরিয়ে নিন।
০ শুইয়ে দিন এবং পা দুটো সামান্য উপরে তুলে ধরুন।
০ প্রচুর পানি কিম্বা অন্যান্য ধরনের পানীয় খেতে দিন।
০ তার ত্বক ঠাণ্ডা করার ব্যবস্থা করুন, যেমন শরীরে টাণ্ডা পানি ছিটিয়ে দেয়া কিংবা স্পঞ্জ দিয়ে গা মুছে দেয়া।
০ তাদের বাতাস করুন।
০ ঘাড়ে এবং বগলের নিচে বরফের প্যাকেট রেখে শরীর ঠাণ্ডা করতে পারেন।
০ আধা ঘণ্টার মধ্যে স্বাভাবিক না হলে হিট-স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। তখন জরুরি-ভিত্তিতে চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।
মনে রাখবেন, কেউ হিট-স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তার শরীরে ঘাম না-ও হতে পারে। তাদের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে এবং তারা জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে পারেন।
কারকুমা জেনে নিন -এ আরও জানুন,
