আপনি কি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন? জানতে চাচ্ছেন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাগুলোর লক্ষণ কি কি?, এর কারন কি এবং বিশেষ করে, কিভাবে এই যন্ত্রণাময় সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়? তাহলে আর চিন্তা নেই!
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় যারা ভুগছেন শুধুমাত্র তারাই জানেন এটা কতটা যন্ত্রণাদায়ক। দেখা গেলো, তেলে ভাঁজা কোন খাবার বা মসলাযুক্ত খাবার খেলেন, অমনি শুরু হয়ে গেলো গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা। আচ্ছা, তাহলে কেন বললাম চিন্তার আর কোন কারন নেই?
কারন এই ব্লগে আমরা গ্যাস্ট্রিকের বিভিন্ন সমস্যার বিস্তারিত, যেমন গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ বা GERD, ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (IBS), গ্যাস্ট্রাইটিস, হার্টের ব্যাথার গ্যাস্ট্রাইটিস সাথে এর পার্থক্য নিয়ে বিস্তর আলোচনা করবো।
তাহলে আর দেরি কেন? চলুন শুরু করা যাক!
Gastroesophageal Reflux Disease বা GERD, একটি দীর্ঘস্থায়ী পরিপাকতন্ত্রীয় রোগ যেখানে পাকস্থলীর এসিড এবং অন্যান্য পরিপাক রসগুলো অস্বাভাবিকভাবে খাদ্যনালীতে ফিরে আসে। এর ফলে খাদ্যনালীর আস্তরণে জ্বালাময়তা ও প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে, যা বিভিন্ন উপসর্গ এবং সম্ভাব্য জটিলতা তৈরি করে।
সাধারণত, খাদ্যনালীর নীচের প্রান্তে একটি পেশীবহুল ভালভ, যাকে লোয়ার এসোফেজিয়াল স্ফিংক্টার (LES) বলা হয়, একটি একমুখী দরজা হিসাবে কাজ করে। খাবার পাকস্থলীতে ঢোকার জন্য এটি কিছুক্ষণের জন্য শিথিল হয় এবং তারপরে পাকস্থলীর খাবার ও এসিড সহ অন্যান্য রসগুলো ফিরে আসা ঠেকাতে পুনরায় আঁটসাঁট হয়ে যায়।
কিন্তু GERD রোগীদের ক্ষেত্রে, এই LES দুর্বল হয়ে পড়ে অথবা ঠিকমতো আঁটসাঁট হয় না। ফলে পাকস্থলীর এসিড খাদ্যনালীতে উঠে আসতে পারে।
আপনার যে সকল কারনে GERD হতে পারে এমন কয়েকটি কারণ রয়েছে:
GERD এর সর্বাধিক প্রচলিত একটি কারণ হচ্ছে নিম্ন খাদ্যনালী স্ফিঙ্কটারের (LES) দুর্বল অবস্থা। বার্ধক্য, কোন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, হাইটাল হার্নিয়া ইত্যাদি কারনে LES দুর্বল হতে পারে।
স্থুলতা, গর্ভাবস্থা এবং আঁটসাঁট পোশাক তলপেটে চাপ বাড়াতে পারে। এগুলো পেটের অংশগুলোকে খাদ্যনালীর দিকে ঠেলে দিতে পারে এবং LES দুর্বল করতে পারে।
মশলাদার, চর্বিযুক্ত, অ্যাসিডিক খাবার, ভরপেট খাবার, অ্যালকোহল, কফি, কার্বনেটেড পানীয়, ধূমপান ইত্যাদি নিম্ন খাদ্যনালী স্ফিঙ্কটার (LES) শিথিল করতে পারে এবং খাদ্যনালীতে জ্বালাতন করতে পারে। এগুলো GERD এর লক্ষণ বা উপসর্গগুলোকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।
হাইটাল হার্নিয়া হচ্ছে একটি অবস্থা যেখানে পেটের অংশ ডায়াফ্রামের মধ্য দিয়ে ধাক্কা দেয়। এটা LES দুর্বল করে দিতে পারে এবং এসিড রিফ্লাক্সে অবদান রাখতে পারে।
(Reference: Link 11, 12)
ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (IBS) হল অনেকগুলো উপসর্গের একটি সামগ্রিক অবস্থা, যেমন পেটে প্রতিনিয়ত ব্যথা, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের কারনে মলত্যাগে সমস্যা ইত্যাদি। আপনার যদি আইবিএস থাকে তবে আপনি এই লক্ষণগুলো অনুভব করতে পারেন পাচনতন্ত্রের কোন দৃশ্যমান ক্ষতি বা অসুস্থতা ছাড়াই।
সাধারণত তিন ধরনের ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম বা আইবিএস দেখা যায়।
এতে পেটে ব্যথা এবং অস্বস্তি, ফোলাভাব, অস্বাভাবিকভাবে বিলম্বিত বা কদাচিৎ মলত্যাগ ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়।
এতে পেটে ব্যথা, অস্বস্তি, এবং অস্বাভাবিকভাবে ঘন ঘন মলত্যাগ, বা আলগা/জলযুক্ত ইত্যাদি ডায়রিয়ার লক্ষণগুলো দেখা যায়।
এই ধরনের IBS এ শক্ত এবং জলযুক্ত মল, উভয় সমস্যাই দেখা যায়।
ঠিক কি কারনে আইবিএস হয় এটা নির্দিষ্ট করে এখনও জানা সম্ভব হয় নি। তবে ধারনা করা হয় নিম্ন বর্ণিত কারনে এটা বৃদ্ধি পেয়ে থাকতে পারেঃ
অন্ত্রের দেয়ালগুলো, পেশীগুলোর স্তরগুলোর সাথে সারিবদ্ধ অবস্থায় থাকে যা আপনার পরিপাকতন্ত্রের মধ্য দিয়ে খাবার সরানোর সাথে সাথে সংকুচিত হয়। যে সংকোচনগুলি স্বাভাবিকের চেয়ে শক্তিশালী এবং দীর্ঘস্থায়ী হয় তা গ্যাস, ফোলাভাব এবং ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে। অপরদিকে, দুর্বল সংকোচন খাদ্য পথের গতি কমিয়ে দিতে পারে এবং শক্ত, শুষ্ক মল হতে পারে।
আপনার পাচনতন্ত্রের স্নায়ুর সমস্যাগুলি অস্বস্তির কারণ হতে পারে যখন আপনার পেট গ্যাস বা মল এর কারনে প্রসারিত হয়। আপনার মস্তিষ্ক এবং অন্ত্রের মধ্যে সংকেত আদান প্রদানের সমন্বয়হীনতা দেখা দিলে, আপনার শরীর হজমের স্বাভাবিক পরিবর্তনের জন্য খুব বেশি প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। এর ফলে ব্যথা, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
বিভিন্ন মানসিক চাপ, বিশেষ করে শৈশবকালের ট্রমা বা চাপযুক্ত ঘটনাগুলির সংস্পর্শে আসা মানুষের মধ্যে আইবিএসের বেশি উপসর্গ দেখা যায়।
আমাদের অন্ত্রের ক্ষুদ্র জীবাণু যেমন ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক এবং ভাইরাস এর পরিবর্তন আইবিএস-এ ভূমিকা পালন করতে পারে। ক্ষুদ্র জীবের এই গ্রুপটিকে অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম বলা হয়। যখন এই গ্রুপে ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়, বিশেষত ব্যাকটেরিয়াগুলির সাথে, এটি আমাদের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে এবং IBS-এর মতো অবস্থার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
আইবিএস উপসর্গ বা লক্ষন ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন হতে পারে। কখনও কখনও, একজন ব্যক্তি বিভিন্ন উপসর্গও অনুভব করতে পারেন। যাইহোক, IBS এর কিছু সাধারণ লক্ষণ হচ্ছে -
( Reference : https://organicnutrition.com.bd/blogs/blog/ibs-treatment-causes-symptoms-and-medications )
প্রদাহ (Inflammation) আইবিএস সৃষ্টিতে ভূমিকা পালন করতে পারে। এক গবেষণায় IBS আক্রান্ত ব্যক্তিদের অন্ত্রের আস্তরণে চলমান প্রদাহ পাওয়া গেছে, যা খালি চোখে দেখা যায় না (মাইক্রোস্কোপিক এবং আণবিক স্তর)। এর মধ্যে এন্টারোএন্ডোক্রাইন কোষ নামক একটি নির্দিষ্ট ধরনের কোষ রয়েছে।
যাদের অন্ত্রে সংক্রমণের পরে IBS দেখা যায়, তাদের এই সংক্রমণ সারা শরীরে প্রদাহ এবং অন্ত্রে মাইক্রোবায়োম পরিবর্তনের কারণ হতে পারে। এতে চলমান, হালকা প্রদাহের একটি চক্র শুরু হয় যার অনেক লক্ষণ দেখা যায় না।
অন্ত্রের আস্তরণের প্রদাহ ছাড়াও, অন্ত্র এবং মস্তিষ্কের স্নায়ুতেও প্রদাহ হতে পারে। এটা হরমোনগুলোর কার্যপ্রণালী এবং IBS যেভাবে জিনগুলোর উপর নিয়ন্ত্রণ করে তা প্রভাবিত করে।
পাকস্থলীর আস্তরণ যখন কোন কারনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সেখানে প্রদাহ তৈরি হয়, তাকে গ্যাস্ট্রাইটিস বলা হয়। অনেকেই এই রোগটিকে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বলে থাকেন। এর প্রভাবে পাকস্থলী এবং পাচনতন্ত্রের মধ্যে গ্যাস, অ্যাসিডিটি , ফোলাভাব, আলসার, বদহজমসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
প্রাথমিকভাবে গুরুতর না হলেও এর প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। যদিও গ্যাস্ট্রাইটিস নিজেই ক্যান্সার নয়, এটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে একটি প্রি-ক্যানসারাস অবস্থা হতে পারে। এর মানে এটি ভবিষ্যতে পাকস্থলীর ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
গ্যাস্ট্রাইটিস কার্যকরভাবে চিকিৎসা করার জন্য এর কারণ চিহ্নিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন কারণে গ্যাস্ট্রাইটিস হতে পারে। এর মধ্যে প্রধান কয়েকটি কারণ হচ্ছে:
ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের মতো ক্ষুদ্র আক্রমণকারীরা কখনও আপনার পেটে ঢুকে পড়তে পারে এবং সমস্যার কারণ হতে পারে। সাধারণত হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি ইনফেকশনের কারনে এমনটা হতে বেশি দেখা যায়। চিকিৎসা না করা হলে এর কারনে দীর্ঘমেয়াদী গ্যাস্ট্রাইটিস হতে পারে।
যখন আপনার শরীর একটি বড় অস্ত্রোপচার, আঘাত, বা গুরুতর অসুস্থতা এর মতো বড় চাপের সম্মুখীন হয়, তখন এটি অস্থায়ীভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলিতে ফোকাস করার জন্য পেটে রক্ত প্রবাহ কমিয়ে দিতে পারে। এটি পেটের আস্তরণের ক্ষতির জন্য সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
অ্যালকোহল এবং কিছু ওষুধের মতো কিছু পদার্থ, যেমন অ্যাসপিরিন এবং আইবুপ্রোফেনের মতো ব্যথানাশক, প্রচুর পরিমাণে বা দীর্ঘ সময়ের জন্য গ্রহণ করলে পেটের আস্তরণে জ্বালাতন করতে পারে। স্টেরয়েডের মতো ওষুধও প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে।
অনেকসময় শরীরের নিজস্ব Immune System বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা, যা সাধারণত সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে, ভুলবশত পেটের আস্তরণে আক্রমণ করে। এর ফলে প্রদাহ হতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী অটোইমিউন গ্যাস্ট্রাইটিস নিজে থেকে বা ক্ষতিকারক অ্যানিমিয়ার মতো কারনে ঘটতে পারে।
রেডিয়েশন থেরাপি, কেমোথেরাপি, বাইল রিফ্লাক্স, ধূমপান এবং অত্যধিক অ্যালকোহল সেবন পেটের আস্তরণকে ক্ষয় করতে পারে। এটা গ্যাস্ট্রাইটিস তৈরিতেও ভূমিকা রাখে।
গ্যাস্ট্রাইটিসের লক্ষণ ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। এর সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
পূর্বে আমরা গ্যাস্ট্রিকের বিভিন্ন সমস্যা, তাদের লক্ষন ও অন্যান্য বিস্তারিত আলোচনা করেছি। চলুন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা প্রতিরোধ, প্রতিকারের জন্য উপকারী কয়েকটি অভ্যাসের ব্যাপারে জেনে নেইঃ
ফাইবার প্রিবায়োটিক হিসাবে কাজ করে। এটা আপনার অন্ত্রে ভাল ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। মটরশুটি, মসুর ডাল, শিম জাতীয় ফসল, বেরি এবং পুরো শস্য জাতীয় খাবার ফাইবারের চমৎকার উৎস হিসাবে কাজ করে।
মানসম্পন্ন প্রোটিন আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য। এটি টিস্যু তৈরি এবং মেরামত করতে, এনজাইম এবং হরমোন তৈরি করতে ব্যবহৃত হয় এবং এটি হাড়, পেশী, তরুণাস্থি, ত্বক বিল্ডিং ব্লকের একটি উপাদান হিসাবে কাজ করে।
ডায়েটে প্রোটিনের বিভিন্ন উৎস যেমন চর্বিহীন মাংস, হাঁস-মুরগি, মাছ, ডিম, দুগ্ধজাত দ্রব্য, লেবু, মটরশুটি, মসুর ডাল, বাদাম শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।
প্রোবায়োটিক দই ,কটেজ পনির, কেফির, কিমচি, স্যুরক্রট এবং মিসোর মতো গাঁজনযুক্ত খাবার আপনার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এই খাবারগুলিতে উপকারী জীবন্ত ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যা অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমকে পুনরায় পূরণ করতে এবং ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করতে পারে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা স্বাস্থ্যকর পরিপাকতন্ত্র বজায় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া এটা মল নরম রাখে এবং নিয়মিত মলত্যাগে সহায়তা করে।
খাদ্যে অত্যধিক চিনি খাওয়া অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমকে ব্যাহত করতে পারে এবং অস্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে পারে। অপরদিকে, প্রক্রিয়াজাত খাবারে প্রায়ই অস্বাস্থ্যকর চর্বি, পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট এবং কৃত্রিম উপাদানের পরিমাণ বেশি থাকে যা অন্ত্রের প্রদাহে অবদান রাখতে পারে।
খাদ্যাভ্যাস এর পাশাপাশি আপনার লাইফস্টাইলে এসকল পরিবর্তন গ্যাস্ট্রিকের জন্য উপকারী হবেঃ
নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগস (এনএসএআইডি) গ্রহনের ফলে গুরুতর প্রতিকূল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। যার মধ্যে কিডনি ব্যর্থতা, জিআই ট্র্যাক্ট/পাকস্থলীর রক্তপাত, আপনার রক্তে প্লেটলেট কমে যাওয়া, লিভারের ক্ষতি এবং উচ্চ রক্তচাপ অন্যতম।
আপনি যদি অনুভব করেন যে আপনার NSAID আপনাকে সাহায্য করছে না, তাহলে এটি বন্ধ করার বিষয়ে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
নিয়মিত অ্যালকোহল পানে লিভারের রোগ এবং ক্যান্সার সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। অ্যালকোহল গ্রহণ বন্ধ, হ্রাস করার ফলে ঘুমের গুণমান উন্নয়ন সহ বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য সুবিধা পেতে করতে পারেন।
ধূমপান পাকস্থলীর অ্যাসিডের উৎপাদন বাড়াতে পারে এবং নিম্ন খাদ্যনালীর স্ফিঙ্কটারের কার্যকারিতা হ্রাস করতে পারে। এই পেশী অ্যাসিড এবং অন্যান্য পাকস্থলীর উপাদানকে খাদ্যনালীতে পুনরায় প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখে।
এছাড়া ধূমপান পাচনতন্ত্রে রক্তের প্রবাহ কমাতে পারে, আপনার অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়া কমাতে পারে এবং প্রদাহ বাড়াতে পারে। ধূমপান ত্যাগ করার ফলে স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম বৃদ্ধি সহ অসংখ্য স্বাস্থ্য সুবিধা পাওয়া যায়।
ভাজা-পোড়া, মশলাদার খাবারে সাধারণত ক্যালোরি বেশি থাকে এবং এটি স্থূলতার তৈরি করতে পারে। যা গ্যাস্ট্রিক সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর রান্নার পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন, যেমন গ্রিলিং, পোচিং, ব্রয়লিং বা বেকিং।
রিফ্লাক্স ট্রিগার করে এমন খাবার সীমিত করুন, যেমন চকোলেট, কফি, মশলাদার খাবার এবং কার্বনেটেড পানীয়। কয়েকবার ভরপেট খাবার গ্রহনের পরিবর্তে প্রতিদিন ছোট, আরও ঘন ঘন খাবার গ্রহন উপকারী হতে পারে।
গ্যাসট্রিকের জন্য উপকারী ফাংশনাল ফুড
কারকুমা অর্গানিক হেলদি গাট এর মূল উপাদান হলো অর্গানিক কারকিউমিনস ও অর্গানিক মালবেরী এক্সট্রাক্ট। কারকিউমিনস এনজাইমের কার্যক্রমকে নিয়ন্ত্রন করে পাকস্থলীকে স্বাভাবিক রাখে ও পাকস্থলীর মিউকাস সিক্রেসন বাড়াতে সাহায্য করে, যা অ্যসিডিটি সংক্রান্ত সমস্যায় সহায়ক ভূমিকা রাখে। এছাড়াও এটি গ্যাস এবং ব্লোটিং সমস্যা কমাতে সহায়তা করে। মালবেরীতে বিদ্যমান পলিফেনল উপকারী ব্যাকটেরিয়া যেমন বিফিডোব্যাকটেরিয়াম এবং ল্যাকটোব্যাসিলাসের বংশ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, যা আমাদের গাট ইকোলজি ব্যালেন্স করে।
(References: 15 - 24)
গ্যাসের ব্যথা এবং হার্টের ব্যথার অনেক সময় বিভ্রান্তির কারণ হতে পারে। এর ফলে বিলম্বিত বা ভুল চিকিৎসার ঝুঁকি থেকেই যায়। চলুন দেখা যাক, গ্যাসের ব্যথার সাথে হার্টের ব্যথার কি কি পার্থক্য রয়েছেঃ
পার্থক্য সমুহ | গ্যাসের ব্যথা | হার্টের ব্যথা |
ব্যথার অবস্থান | ব্যথা সাধারণত তলপেটে এবং কখনও কখনও বুকে অনুভূত হয়। | ব্যথা সাধারণত বুকে অনুভূত হয় এবং শরীরের অন্যান্য অংশে যেমন বাহু, চোয়াল, ঘাড়, পিঠ বা পেটে ছড়িয়ে পড়তে পারে। |
ব্যথার প্রকৃতি | ব্যথা তীক্ষ্ণ, সুক্ষ বা নিস্তেজ ব্যথা হতে পারে।এর জন্য পেটে চাপ, পূর্ণতা বা ফোলা ভাবও অনুভূত হতে পারে। | প্রায়শই বুকে তীব্র চাপ বা পেষণ সংবেদনের মত অনুভূত হয়। |
লক্ষণ | ঢেকুর তোলা, পেটে ফোলাভাব, গ্যাস ত্যাগ করা। | শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব, বমি, ঘাম, হালকা মাথাব্যথা, মানসিক উদ্বেগ |
ব্যথার সময়কাল | ব্যথা সাধারণত আসে এবং যায়, এবং গ্যাস ত্যাগ করে বা মলত্যাগের মাধ্যমে স্বস্তি পাওয়া যায়। | ব্যথা সাধারণত কয়েক মিনিটের বেশি স্থায়ী হয় এবং বিশ্রাম বা ওষুধ দিয়ে চলে যায় না। |
(References: 11, 12, 13, 14)
আমরা “গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাগুলোর লক্ষণ কি কি?” নিয়ে লেখা এই ব্লগের শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। ব্লগটিতে আমরা গ্যাস্ট্রিকের বিভিন্ন সমস্যা, এর কারন, লক্ষন এবং প্রতিকারের উপায়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। এছাড়া আমরা গ্যাস্ট্রাইটিসের ব্যথা ও হার্টের ব্যথার পার্থক্যগুলোও জেনেছি।
সুখবর হচ্ছে সঠিক যত্ন এবং চিকিৎসার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাগুলো থেকে আরোগ্য লাভ করা সম্ভব। এর জন্য একটি সঠিক খাবারের রুটিন প্রস্তুত করতে আপনি একজন ডায়েটিশিয়ান বা পুষ্টিবিদদের সাথে পরামর্শ নিতে পারেন। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাগুলোর লক্ষণগুলি দীর্ঘস্থায়ী বা গুরুতর হলে সময় নষ্ট না করে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
References:
Comments will be approved before showing up.
mahahospital
October 26, 2024
Get the Best Interventional Pulmonologist in Rajahmundry, from expert Lung Specialists. We offer the Diagnosis for Lung Problems.
https://www.mahahospital.com/