অর্গানিক ফুড বা জৈব খাবার আজকাল অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আপনি হয়তো শুনেছেন যে অর্গানিক খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, কিন্তু আপনি কি জানেন অর্গানিক ফুড কি এবং কেন তা এত গুরুত্বপূর্ণ?
এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে, প্রথমে আমাদের বুঝতে হবে কীভাবে এই খাবারগুলো তৈরি হয়। অর্গানিক খাবার উৎপাদনে রাসায়নিক সার, কীটনাশক বা ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহার করা হয় না। এটি প্রাকৃতিক উপায়ে চাষ করা হয়, যা আমাদের শরীর এবং পরিবেশের জন্য ভালো।
এছাড়াও, অর্গানিক ফুডে পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ বেশি থাকে এবং এটি খেলে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। যদি আপনি স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে থাকেন এবং পরিবেশকে রক্ষা করতে চান, তাহলে অর্গানিক ফুড কেন গুরুত্বপূর্ণ তা বোঝা জরুরি।
এই ব্লগ পোস্টে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব কেন নরমাল খাবারের পরিবর্তে আপনার অর্গানিক ফুড বেছে নেওয়া উচিত। এর আগে চলুন জেনে নিই:
অর্গানিক ফুড হলো সেই ধরণের খাবার যার উৎপাদন পদ্ধতিতে কৃত্রিম সার, কীটনাশক, আগাছানাশক, রেডিয়েশন বা বিকিরণ দ্বারা সংরক্ষিত বীজ, জেনেটিকালী মোডিফাইড বীজ, লাইভস্টক ফিড অ্যাডেটিভ, গ্রোথ রেগুলেটর ব্যবহৃত হয় না । এ পদ্ধতিতে উৎপাদিত খাদ্যপণ্যকে নিরাপদ খাদ্যের উৎস হিসেবে দাবী করা যেতে পারে।
আমাদের আশেপাশেই যে Chain shop গুলো আছে তার প্রায় প্রত্যেকটিতেই অর্গানিক পন্যের একটি কর্নার চোখে পড়ে। সেখানে অর্গানিক নামে যে সব শাক সবজি, মাছ, চাল-ডাল ইত্যাদি বিক্রি হচ্ছে, তা কি আসলেই অর্গানিক ? অর্গানিকের নামে আমরা প্রতারিত হচ্ছি না তো ? অর্গানিক নামে বাজারে যে সব পন্য পাওয়া যাচ্ছে, যা আমরা তুলনামূলকভাবে বেশি মূল্য দিয়ে কিনছি, এ সব বিষয়ে আমাদের দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।
আমাদের দেশে অর্গানিক চাষাবাদ (Organic farming) বলতে এমন একটি ধারনা আছে যে, কৃত্রিম সার ব্যবহার না করে শুধুমাত্র জৈব সার বা গোবর সার ব্যবহার করলেই অর্গানিক হয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে অর্গানিক চাষাবাদ হল (Organic farming) এমন এক ধরনের সুপরিকল্পিত খামার ব্যবস্থাপনা এবং উৎপাদন পদ্ধতি যা টেকসই কৃষির মাধ্যমে উচ্চমান সম্পন্ন খাদ্য উৎপাদন করে। এ ব্যবস্থা পরিবেশ, মানুষ, উদ্ভিদ ও প্রানী জগতের সাথে সু-সমন্বয়পূর্বক সমগ্র পৃথিবীর জন্য কল্যানকর ভূমিকা রাখে।
অর্গানিক চাষাবাদ পদ্ধতিতে কৃত্রিম সার,কীটনাশক, আগাছানাশক, রেডিয়েশন বা বিকিরণ দ্বারা সংরক্ষিত বীজ, জেনেটিকালী মোডিফাইড বীজ, লাইভস্টক ফিড অ্যাডেটিভ, গ্রোথ রেগুলেটর ব্যবহৃত হয় না । এটি স্বাস্থ্যের পক্ষে অধিক নিরাপদ । এই পদ্ধতিতে উৎপাদিত খাদ্যপণ্যসমূহ অনুমোদিত সার্টিফাইড বডি দ্বারা অডিট করে এবং অডিট সন্তোষজনক পাওয়া সাপেক্ষ অর্গানিক সার্টিজৈফিকেট দেয়া হয়। ফলে এই সকল খাদ্যপণ্যের একটি নির্দিষ্ট জৈব মান বজায় থাকে। অর্গানিক খাবারে পুষ্টিগুণ বেশী থাকে এবং এটি দীর্ঘমেয়াদে শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
অর্গানিক চাষাবাদের সাথে আমাদের খাদ্যের পুষ্টিমানের যে সম্পর্ক রয়েছে তা বর্তমানে বেশ আলোচিত। এ বিষয়ে সাম্প্রতিক গবেষণায় উৎঘাটিত কিছু তথ্য নিম্নে উপস্থাপন করা হলো:
১) অর্গানিক চাষাবাদে কৃত্রিম Pesticides, Herbicides, Fungicides অথবা Chemical fertilizer ব্যবহৃত হয় না। এই সকল ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ শরীরে ক্যান্সার তৈরিতে ভূমিকা রাখে। European Parliament কর্তৃক ২০১৬ ইং সালে প্রকাশিত “Human health implications of organic food and organic agriculture” নামক এক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় যে, Pesticides Residues গর্ভবতী মায়ের জন্য যেমন ক্ষতিকর, তেমনি এটি গর্ভস্থ শিশুর নিউরোসেল (Gray matter) বৃদ্ধি সাধনে বাঁধা প্রদানের মাধ্যমে শিশুর মানসিক বিকাশকে ব্যহত করে। অর্গানিক খাবার গ্রহণের দীর্ঘমেয়াদী সুফল হল, শরীরের Immune system সুস্থ্য ও অধিক কার্যক্ষম থাকে ।
২) বিভিন্ন গবেষণা থেকে দেখা যায় যে, অর্গানিক খাবার বেশি পুষ্টিমান সম্পন্ন এবং অধিক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এই সকল খাদ্য জৈব সার সংযুক্ত মাটিতে চাষ করা হয় বলে শরীরের টক্সিন (বিষাক্ত উপাদান) নিরসনে ভূমিকা রাখে। অর্গানিক ফলমূল ও সবজি গ্রহণের ফলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ বেড়ে যায় ২০%-৪০% । এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (Anti-oxident) অতিরিক্ত ফ্রি-রেডিক্যাল (Free Redical) ধ্বংসে সহায়তা করে শরীরকে Oxidative Stress থেকে মুক্ত রাখে ।
৩) অর্গানিক খাবার Radiation থেকে মুক্ত থাকে । Irradiation এর ফলে খাদ্যের Macronutrients এবং Micronutrients এর পরিবর্তন হয়, যা ফ্রি-রেডিক্যাল তৈরিতে ভূমিকা রাখে। এর ফলে Oxidative stress বেড়ে যাওয়ার মাধ্যমে নানারকম স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দেয়।
৪) বর্তমানে Livestock এ প্রচুর পরিমাণে অনিয়ন্ত্রিত Antibiotics ব্যবহার এর ফলে Antibiotic resistance তৈরি হচ্ছে যা পশু থেকে মানুষের মাঝে হুমকি হিসেবে ছড়িয়ে পড়ছে। Organic Livestock এ Antibiotics, Pathogens অথবা Growth hormones এর উপস্থিতি খুব কম থাকে ৷
৫) অর্গানিক খাবার বিভিন্ন ধরনের Food Additives যেমন- কৃত্রিম রং, প্রিজারভেটিভস্, সুইটনারস্ ইত্যাদি থেকে মুক্ত থাকে, যা খাবার হজমশক্তি বৃদ্ধি এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক।
৬) American Academy of Environmental Medicine (AAEM) এর গবেষণায় দেখা গেছে যে, GMO food পরিপাকতন্ত্র ও ইমিউন সিস্টেম এর স্বাভাবিক কার্যক্রমের ব্যত্যয় ঘটায়। অর্গানিক চাষাবাদে Gmo Seed ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ বিধায় অর্গানিক ফুড (Organic food) খাওয়ার মাধ্যমে উক্ত বাড়তি শারীরিক জটিলতা থেকে আমরা মুক্ত থাকতে পারি ।
পরিশেষে বলা যায়, Organic farming এর সাথে যুক্ত কৃষক, শ্রমিক ও ভোক্তা| সবাই একটি সুশৃঙ্খল Eco-System এর অংশ বিশেষ হয়ে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করে| এবং অর্গানিক ফুড সকলের শরীরের জন্যই অনেক উপকারী ।
অর্গানিক খাবার হতে হলে খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট কিছু হওয়ার জন্য কিছু শর্তাবলী পালন করতে হয় ( 2 )। এই শর্তগুলো মেনে চললেই কোনো খাবারকে অর্গানিক হিসেবে বিবেচনা করা হয় ( 3 )। যেমনঃ
চাষাবাদ প্রসঙ্গে প্রথমেই আসছে মাটির উর্বরতা ও উপযোগিতা। অর্গানিক চাষাবাদ শুরু করার আগেই নিশ্চিত হতে হবে যে, মাটির খনিজ উপাদান, জৈব উপাদান, মাটিতে বিদ্যমান জীবানু ইত্যাদি নির্ধারিত মান (Standard) অনুযায়ী আছে কিনা?
এছাড়াও আশপাশের জমি থেকে, বাতাস থেকে বা ঝড় বৃষ্টির মাধ্যমে জমিতে কোন দূষিত পদার্থ আসার সম্ভাবনা থাকলে তা প্রতিরোধে ব্যাবস্থা নিতে হবে। মাটিতে ক্ষতিকারক ভারী ধাতু যেমন লেড, আর্সেনিক, মার্কারী ইত্যাদির ন্যূনতম মাত্রা নিশ্চিত করতে হবে।
এবং জমির চাষাবাদের পূর্ব ইতিহাস, কত বছর যাবত অনাবাদী আছে ইত্যাদি তথ্যাদি লিখিত আকারে থাকা অর্গানিক চাষাবাদের অত্যাবশ্যকীয় শর্ত । এ সকল শর্ত মেনে চলার মাধ্যমে জমিতে অর্গানিক ফসল উৎপাদন করা সম্ভব।
এর পরে আসে বীজ এর ব্যাপারটি, বীজই হল উন্নত ফলনের প্রধান ধাপ । বীজের গুণগত বৈশিষ্টের মাঝেই পরবর্তী স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ নিহিত থাকে। সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে জেনেটিক্যালি মোডিফাইড সীড থেকে উৎপাদিত খাদ্য পণ্য বন্ধান্ত, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া, অকাল বার্ধক্য ইত্যাদি মারাত্বক স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়। অর্গানিক চাষাবাদের ক্ষেত্রে বীজ অবশ্যই নন-জিএমও (Non-GMO) হতে হবে।
জেনেটিক্যালি মোডিফাইড নয় বা Non- GMO বলতে স্বাভাবিক প্রজনন বা প্রাকৃতিক পূর্ণ সমন্বয় (Natural recombination) এর মাধ্যমে সৃষ্ট জীবকে বুঝায় যার ডিএনএ পর্যায়ে কোন পরিবর্তন আনা হয়নি। সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে জেনেটিক্যালি মোডিফাইড খাবার দীর্ঘমেয়াদে মানবস্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়।
কৃত্রিম সার ব্যবহারের ফলে ফসলের মধ্যে থেকে যাওয়া সারের অতি ক্ষুদ্র অবশিষ্ট অংশ (Residues) শরীরে বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকির কারণ বৃদ্ধি করে। অর্গানিক পদ্ধতির চাষাবাদে প্রায় সব ধরণের কৃত্রিম সার ব্যবহার নিষিদ্ধ। এর পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহার করতে হবে।
কীটনাশক এর অপরিকল্পিত ব্যবহারে খাদ্যের উপকারিতা কমে যায় ও বিষাক্ততা সৃষ্টি করে । অর্গানিক চাষাবাদ পদ্ধতিতে কোন কীটনাশক (Pesticides) ও আগাছা নাশক (Herbicides) ব্যবহারের ক্ষেত্রেও রয়েছে কঠিন নিয়ম কানুন।
ভালো দূষণমুক্ত বীজের মাধমে উন্নত ধরনের ফলন পাওয়া সম্ভব। বিকিরণের ফলে খাদ্য শষ্যের পুষ্টিমান হ্রাস পায়; যা দীর্ঘমেয়াদে আমাদের সুস্বাস্থ্যের অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। অর্গানিক চাষাবাদে বিকিরণের মাধ্যমে বীজ, খাদ্যশস্য/পণ্য সংরক্ষণ করা যাবে না।
সুপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা ছাড়া প্রকৃত অর্গানিক চাষাবাদ সম্ভব নয়। চাষাবাদের সময় কি ধরণের কৃষি যন্ত্রপাতি জমিতে ব্যবহৃত হলো? যন্ত্রপাতিতে কি ধরণের তেল/জ্বালানী ব্যবহার করা হলো? কোন তারিখে কতজন শ্রমিক কাজ করলো? তারা স্বাস্থ্য বিধি মেনে কাজ করল কিনা? কোন মোড়কে কিভাবে শস্য সংরক্ষণ করা হলো? ইত্যাদি সবই অর্গানিক চাষাবাদ এর ক্ষেত্রে বিধি মোতাবেক মানতে হয় এবং সমস্ত তথ্যই রেকর্ড/ সংরক্ষণ করতে হয়।
একটি পন্য অর্গানিক হতে হলে অবশ্যই কোন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এটি অর্গানিক সার্টিফাইড হতে হয় এবং উক্ত প্রতিষ্ঠানের Organic Seal/ Logo পন্যের লেবেলে মুদ্রিত থাকবে। Seal দেখে নিশ্চিত হওয়া যাবে পন্যটি কোন দেশের Organic Standard অনুসরন করে চাষাবাদ/ উৎপাদন করা হয়েছে। অধিকাংশ উন্নত দেশেই এখন অর্গানিক সার্টিফিকেশনের জন্য নিজস্ব প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
এখানে, United State Department of Agriculture (USDA), Japan Agriculture Standard (JAS) এবং European Union (EU) এর অর্গানিক সার্টিফিকেশন অধিক নির্ভরযোগ্য বলে বিবেচিত হয়ে আসছে। এদের Organic Seal/ Logo যথাক্রমে নিচে দেখানো হলো ।
তবে, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত অর্গানিক সার্টিফিকেশনের জন্য কোন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি। আবার লোকাল বাজার থেকে কাচা শাক-সবজি কিনার সময় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয়। না, চিন্তার কোনো কারণ নেই, আমরা আপনাকে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ গোপন সূত্র দিয়ে দিব, যেগুলো মিলিয়ে আপনি নিজেই বুঝবেন কোনটি অর্গানিক ফুড আর কোনটি অর্গানিক নয়।
বাংলায় একটা প্রবাদ আছে “চকচক করলেই সোনা হয় না”, এটায় হতে পারে অর্গানিক ফুড চিনার প্রথম সুত্র। কোনো প্রকার রাসায়নিকের ব্যবহার না করায়, অর্গানিক ফল ও সবজি দেখতে পারফেক্ট হয় না ( 4 )। এগুলোর গায়ে দাগ বা ত্রুটি দেখা যেতে পারে, এটা খুবই স্বাভাবিক। তবে, এই ত্রুটিগুলো খাবারের পুষ্টিগুণে কোনো প্রভাব ফেলে না, বরং প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত হওয়ার প্রমাণ বহন করে।
রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক উপায়ে চাষ করতে হলে, অনেক বেশি যত্ন এবং শ্রমের প্রয়োজন হয়, যা খরচ বাড়িয়ে দেয়। আবার রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে উৎপাদন তুলনামূলক কম হয়। তাই এর উৎপাদন প্রক্রিয়ার কারণে অর্গানিক খাবারের দাম সাধারণত বেশি হয় ( 5 )।
অধিকাংশ কাঁচা শাক-সবজি ও ফলের প্রাকৃতিক নিয়ম হলো অল্প সময়ের গাছ/জমি ঠেলে উঠানোর পর অল্প সময়ের জন্য তাজা থাকে। কিন্তু বর্তমানে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঢাকায় নিয়ে আসার পরও কৃত্রিম প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করে খাবার তাজা রাখা হয়। তাই একটু নেতিয়ে পড়া খাবার গুলো হতে পারে প্রিজারভেটিভমুক্ত এবং স্বাস্থকর ( 6 )।
তবে অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে এটাও মনে রাখবেন, নেতিয়ে পড়া মানেই অর্গানিক ফুড নয় । অনেকসময় অধিক রাসায়নিক সার প্রয়োগের কারণে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যেই শাক-সবজি একটু নেতিয়ে পড়ে।
অর্গানিক ফল বা সবজিতে মাঝে মাঝে ২/১টি পোকামাকড় পাওয়া যেতে পারে, কারণ এতে কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত খাবারে পোকামাকড়ের উপস্থিতি অস্বাভাবিক নয়, বরং এটি রাসায়নিক মুক্ত চাষাবাদের একটি লক্ষণ ( 7 )। মনে রাখবেন, এগুলো বিষাক্ত নয়, তাই একটু পরিষ্কার করলেই এগুলো সহজে খাওয়ার উপযোগী করা যায়।
অর্গানিক খাবারের স্বাদ এবং গন্ধ সাধারণত বেশি তাজা ও প্রাকৃতিক হয়। রাসায়নিক পদার্থ এবং প্রিজারভেটিভের ব্যবহার না থাকায়, এই খাবারগুলো তাদের আসল স্বাদ ধরে রাখে ( 8 )। অনেকেই অর্গানিক ফুডকে বেশি সুস্বাদু মনে করেন, কারণ এতে কৃত্রিম উপাদান নেই যা স্বাদের ওপর প্রভাব ফেলে।
এছাড়াও রাসায়নিক সার ব্যবহৃত বা প্রিজারভেটিভ যুক্ত খাবার আকারে একটু বেশি বড় হতে পারে, রান্নার জন্য সময় বেশি লাগতে পারে, এবং রান্না পর তেল ও মসলার ঘ্রান বেশি থাকে। অন্যদিকে, অর্গানিক ফুড একটু ছোট আকৃতির হয়, রান্নায় সময় কম লাগে, এবং মসলা পরিবর্তে খাদ্যের ঘ্রান থাকে বেশি। এসব লক্ষণ দেখে আপনি সহজেই চিনতে পারবেন কোনটি অর্গানিক ফুড আর কোনটি নয়।
তবে মনে রাখবেন, এই লক্ষণগুলো থাকলেই অর্গানিক ফুড হিসেবে গণ্য করা যায় না। এগুলো শুধুমাত্র অর্গানিক ফুড চিনার প্রাথমিক লক্ষণ। কিন্তু আপনি যদি নিশ্চিত হতে চান, তাহলে অবশ্যই গ্রহণযোগ্য 'অর্গানিক সার্টিফিকেশন' দেখে নিবেন।
এছাড়াও যেসব খাদ্য অর্গানিক ফুড হওয়ার সকল শর্তাবলী পূরণ করে, তাদেরকে এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
অর্গানিক ফুড কি এবং কেন তা নিয়ে আলোচনা করার পর, সহজেই বোঝা যায় যে সুসাস্থ এবং খাদ্য নিরাপদতায় অর্গানিক ফুডের কোনো বিকল্প নেয়। অর্গানিক খাবার শুধু আমাদের স্বাস্থ্য নয়, বরং ফসলি জমি ও পরিবেশের জন্যও অত্যন্ত উপকারী।
রাসায়নিক সার, কীটনাশক, এবং অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদান মুক্ত এই খাবারগুলো শরীরকে নিরাপদ রাখার পাশাপাশি পুষ্টিগুণে ভরপুর। যেহেতু অর্গানিক ফুড প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত হয়, তাই এটি খেলে শরীরে ক্ষতিকর টক্সিন জমে না, ফলে দীর্ঘমেয়াদে ভালো স্বাস্থ্য বজায় থাকে।
একইসঙ্গে, অর্গানিক ফার্মিং পদ্ধতি আমাদের মাটি, পানি এবং বায়ুকে দূষণমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। যদিও অর্গানিক খাবারের দাম কিছুটা বেশি হতে পারে, এটি স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য বিনিয়োগ হিসাবে বিবেচনা করা উচিত। তাই, আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অর্গানিক ফুড যুক্ত করা একটি সুস্থ ও নিরাপদ জীবনযাপনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
অর্গানিক ফুড হলো সেই ধরণের খাবার যার উৎপাদন পদ্ধতিতে কৃত্রিম সার, কীটনাশক, আগাছানাশক, রেডিয়েশন বা বিকিরণ দ্বারা সংরক্ষিত বীজ, জেনেটিকালী মোডিফাইড বীজ, লাইভস্টক ফিড অ্যাডেটিভ, গ্রোথ রেগুলেটর ব্যবহৃত হয় না । এ পদ্ধতিতে উৎপাদিত খাদ্যপণ্যকে নিরাপদ খাদ্যের উৎস হিসেবে দাবী করা যেতে পারে।
শতভাগ অর্গানিক হওয়া কঠিন হলেও অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব। তবে এটি নির্ভর করে কৃষক ও উৎপাদকের উপর, তারা কতটা প্রাকৃতিক পদ্ধতি মেনে চাষাবাদ করেন। কিছু খাবারে মাটির দূষণ বা বায়ু দূষণ থেকে সামান্য পরিমাণে রাসায়নিক উপাদান থাকতে পারে, তবে এগুলোও অর্গানিক সার্টিফিকেট পায় যদি তারা প্রধানত প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত হয়।
অর্গানিক চাষাবাদ পদ্ধতিতে কৃত্রিম সার,কীটনাশক, আগাছানাশক, রেডিয়েশন বা বিকিরণ দ্বারা সংরক্ষিত বীজ, জেনেটিকালী মোডিফাইড বীজ, লাইভস্টক ফিড অ্যাডেটিভ, গ্রোথ রেগুলেটর ব্যবহৃত হয় না। এই সকল খাদ্যপণ্যের একটি নির্দিষ্ট জৈব মান বজায় থাকে। এটি স্বাস্থ্যের পক্ষে অধিক নিরাপদ, অর্গানিক খাবারে পুষ্টিগুণ বেশী থাকে এবং এটি দীর্ঘমেয়াদে শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
Organic Baby Food: Organic baby food is made from fruits, vegetables, and grains that are grown without the use of synthetic pesticides or fertilizers. These foods are free from harmful additives and preservatives and are a great way to introduce your baby to healthy eating habits.
I love organic food. But it is very difficult to get. I want to thank Organic Nutrition Ltd. I think they will do their work honestly.
Interested
Comments will be approved before showing up.
All Organic Products
July 10, 2023
Organic Baby Food: Organic baby food is made from fruits, vegetables, and grains that are grown without the use of synthetic pesticides or fertilizers. These foods are free from harmful additives and preservatives and are a great way to introduce your baby to healthy eating habits.